![]() |
সংগৃহীত |
বৃহস্পতিবার এনবিআরের কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মাসিক রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। এনবিআর কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই বৈঠকে বন্ড সুবিধা অপব্যবহার, কর ফাঁকি ও ডিজিটাল কর ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। প্রমাণ পাওয়া মাত্রই বন্ড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। কেউ ছাড় পাবে না।” তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের অপব্যবহারে রাজস্ব কর্মকর্তারা জড়িত থাকলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি
এনবিআরের তথ্যমতে, বন্ড সুবিধার কাঁচামাল দিয়ে উৎপাদিত পণ্য পুরোপুরি রপ্তানির কথা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান তা খোলা বাজারে বিক্রি করছে। ফলে বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে।
বন্ড অপব্যবহার ঠেকাতে ইতোমধ্যে এনবিআর ‘বিআইএন লক’সহ ফৌজদারি মামলা এবং অভিযান পরিচালনা করছে। তবে অতীতে এই ধরনের কার্যক্রম শুরু হলেও তা পরে অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ডিজিটালাইজেশনের নির্দেশ
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে বন্ড-সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম পুরোপুরি অনলাইনে নিয়ে আসা হবে। এছাড়া, সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম, অনলাইন আয়কর রিটার্ন, ই-টিআইএন ও ই-টিডিএস সিস্টেমের সংযুক্তির নির্দেশও দেন তিনি। প্রত্যেক অনলাইন সেবার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্য পূরণ না হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার নির্দেশ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
কর আদায়ে কঠোর অবস্থান
টিআইএন থাকা সত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করছেন না, তাদেরকে চিহ্নিত করে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী কর আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ভ্যাট ফাঁকিদাতাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সৎ করদাতাকে হয়রানি নয়, বরং কর ফাঁকিকে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
কনটেইনার জট নিরসনে উদ্যোগ
বন্দর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা কনটেইনারগুলোর নিলাম কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এসব কনটেইনার ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নিলামের মাধ্যমে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৮ হাজার প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স
বর্তমানে এনবিআরের অধীনে প্রায় ৮ হাজার প্রতিষ্ঠান বন্ড লাইসেন্স সুবিধা ভোগ করছে, যাদের বেশিরভাগই তৈরি পোশাক ও অ্যাকসেসরিজ খাতের। দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় বস্ত্রকল মালিকরা অভিযোগ করে আসছেন, এই সুবিধার অপব্যবহার করে বাজারে অসাধু প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সভায় কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগসহ এনবিআরের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। রাজস্ব আহরণ বাড়িয়ে কর-জিডিপি অনুপাত উন্নত করতে সকল বিভাগকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
0 মন্তব্যসমূহ