![]() |
অসংখ্য কবুতরের ঝাঁক |
মক্কার পবিত্র মসজিদ আল-হারামের আঙ্গিনায় প্রতিদিনই চোখে পড়ে অসংখ্য কবুতরের ঝাঁক। হজ কিংবা ওমরাহ করতে আসা মুসল্লিদের চারপাশে ঘুরে বেড়ায় এই বিশেষ পাখিরা। তাদের বলা হয় হারাম কবুতর, কারও কাছে পরিচিত ফিভার পায়রা বা শান্তির প্রতীক পায়রা নামে।
সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো—এই কবুতররা কখনো কাবা শরিফ বা এর আশপাশ নোংরা করে না। এ কারণে স্থানীয়রা ও তীর্থযাত্রীরা বিশ্বাস করেন, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এমন এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন যাতে তারা পবিত্র স্থানকে অপবিত্র না করে।
ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটির তারিখ পরিবর্তন
বিশেষ মর্যাদা ও সুরক্ষা
ইসলামে এই কবুতরদের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। তাদের হত্যা করা নিষিদ্ধ, এমনকি বাসা সরানো বা ডিম নষ্ট করাও জায়েজ নয়। হজযাত্রীরা মসজিদের আঙিনায় দাঁড়িয়ে তাদের খাবার দেন, অনেকে হাতের কাছে ডেকে আদরও করেন। ফলে মানুষ ও পাখির মধ্যে এক অনন্য সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, যা শত শত বছরের ঐতিহ্য বহন করে আসছে।
স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য
গবেষকদের মতে, হারাম কবুতরের রঙ, চোখের গড়ন ও লম্বা ঘাড় অন্যান্য কবুতরের থেকে আলাদা। যত ভিড়ই হোক, তারা ভীত হয় না এবং সহজেই মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। এজন্য তারা মক্কার অন্যতম চেনা নিদর্শন হয়ে উঠেছে।
ঐতিহাসিক বিশ্বাস
ইতিহাসবিদরা বলেন, নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের সময় সাওর গুহার প্রবেশমুখে কবুতরের বাসা বাঁধা ছিল। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, বর্তমান হারাম কবুতররা সেই বংশধরের উত্তরসূরি। আরও অনেকে তাদেরকে আবাবিল পাখির সাথে যুক্ত করেন—যারা আল্লাহর নির্দেশে আবরাহার সেনাদের ধ্বংস করেছিল। আবার কারও মতে, তারা নূহ (আ.)-এর জাহাজে থাকা কবুতরের বংশধর। এসব বর্ণনা ইসলামি ইতিহাসে নানা রকমভাবে উল্লেখিত আছে।
চিরন্তন প্রতীক
স্থানীয়দের ধারণা, এই কবুতররা আল্লাহর নিরাপদ আশ্রয়ের প্রতীক। আকাশে উড়ে বেড়ানো তাদের দৃশ্য পবিত্র হারামের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। আরব ঐতিহাসিক সামির আহমেদ বারকাহর ভাষায়, “গ্র্যান্ড মসজিদের কবুতরদের আলাদা বৈশিষ্ট্যই তাদের অন্য সব পাখি থেকে আলাদা করেছে। তারা যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদত্ত বিশেষ এক নিরাপত্তার মধ্যে থাকে।”
0 মন্তব্যসমূহ